Translate

Manu

Marquee

কিছু কথাঃ পৃথিবীতে সর্বশ্রেষ্ঠ্য কাজ হলো নামাজ পড়া, তারপর-কোরআন পড়া, তারপর-হালাল রিজিকের অন্নেষণ করা।

Slide

  • slider free downloadলা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ(স.)
  • g src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjANOEzkcBdXRgDdVW1EmZILtDChnJiFaGYBJPcRHsEwlpV3s_DYA7chNB-TaSBNyQsh2KB7r0BIk4JMDs7FfMCjVEaVjnP34cIgVrwjNUyP3uz8SXlMIJ6tvQpN_lQihGE_1NkeZ6cI38/s1600/0000000.jpg" alt="free image slider" title="ফাইয়ার ইবাকুয়েশন ড্রিল- বিনোদা নীটওয়্যার লিমিটেড" id="wows1_1" />কথা বলছেনঃ আব্দুল্লাহ-আল-মুক্তাদী, নির্বাহী-বিনোদা নীটওয়্যার লিঃ/li>
  • slider jquery freeBinoda Knitwear Limited
  • jquery slider freeThis is the largest amphitheatre ever built.
  • slider jquery freeBinoda Knitwear Limited
  • slider jquery freeআলমাছ কাজী কারিমিয়া মাদরাসা
  • slider jquery freeআলমাছ কাজী কারিমিয়া মাদরাসা
  • slider jquery freeআলমাছ কাজী কারিমিয়া মাদরাসা

Monday, January 22, 2024

 কুরআন মাজীদের কয়েকটি আয়াত ও সূরা

বিশেষ কিছু ফযীলত

 

মাওলানা মুহাম্মাদ তাওহীদুল ইসলাম তায়্যিব


বিশুদ্ধভাবে কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করতে পারা মুমিনের জীবনে পরম সৌভাগ্য। এ সৌভাগ্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের এক মহাদান।


কুরআন মাজীদকে আল্লাহ তাআলা ‘লওহে মাহফুযে’ সংরক্ষিত করেছেন। এরপর হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালামের মাধ্যমে তাঁর সবচে প্রিয়, সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর নাযিল করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে এই কুরআন তিলাওয়াত করেছেন। তাঁর সাহাবীগণ তিলাওয়াত করেছেন। যুগে যুগে উম্মতের শ্রেষ্ঠ মনীষীরা তিলাওয়াত করেছেন। এর চেয়েও আনন্দের কথা হল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবায়ে কেরাম এবং আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণ এই কুরআন যেভাবে তিলাওয়াত করেছেন এখনো সেভাবেই সংরক্ষিত আছে। আমার মতো গোনাহগারের জন্য সেই মহাগ্রন্থ-কুরআনের শব্দ-বাক্য-মর্ম উচ্চারণ-অনুধাবন করতে পারা মহা সৌভাগ্য নয় তো কী?


কুরআন মাজীদে এক শ চৌদ্দটি সূরা এবং ছয় হাজার দুই শ ছত্রিশটি আয়াত রয়েছে। কুরআনের প্রতিটি সূরা, প্রতিটি আয়াত এবং প্রতিটি হরফ তিলাওয়াতের সওয়াব ও ফযীলতের পাশাপাশি কিছু আয়াত ও সূরার বিশেষ কিছু ফযীলতের কথাও উল্লেখিত হয়েছে হাদীস শরীফে। তন্মধ্য থেকে কয়েকটি আয়াত ও সূরার ফযীলত এখানে আলোচনা করা হল।


সূরা ফাতিহা

আবু সায়ীদ ইবনুল মুআল্লা রা. বলেন, আমি একদিন মসজিদে নামায পড়ছিলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন-

لَأُعَلِّمَنَّكَ سُورَةً هِيَ أَعْظَمُ السُّوَرِ فِي الْقُرْآنِ، قَبْلَ أَنْ تَخْرُجَ مِنَ الْمَسْجِدِ.

তুমি মসজিদ থেকে বের হওয়ার আগেই তোমাকে এমন একটি সূরা শেখাব, যা কুরআন মাজীদের সবচে মহান সূরা।... এরপর বললেন, (সেটি হল) আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন (অর্থাৎ সূরা ফাতিহা)। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৪৪৭৪


আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

إِذَا قَالَ الْإِمَامُ : غَیْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَیْهِمْ وَ لَا الضَّآلِّیْنَ فَقُولُوا: آمِينَ، فَإِنَّهُ مَنْ وَافَقَ قَوْلُهُ قَوْلَ الْمَلَائِكَةِ، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ.


ইমাম যখন বলেন-

غَیْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَیْهِمْ وَ لَا الضَّآلِّیْنَ.

তখন তোমরা ‘আমীন’ বল। (কেননা ফেরেশতারাও তখন আমীন বলে) যার আমীন বলা ফেরেশতাদের বলার সাথে মিলে যাবে তার অতীত জীবনের গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৭৮২, ৬৪০২


আয়াতুল কুরসী

উবাই ইবনে কা‘ব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন আবুল মুনযিরকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আবুল মুনযির, তুমি কি জানো আল্লাহর কিতাবের যে আয়াতগুলো তুমি হিফয করেছ তার মধ্যে কোন্ আয়াত শ্রেষ্ঠ?

আবুল মুনযির বলেন, আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন।

তিনি আবার বললেন, হে আবুল মুনযির, তুমি কি জানো আল্লাহর কিতাবের যে আয়াতগুলো তুমি হিফয করেছ তার মধ্যে কোন্ আয়াত শ্রেষ্ঠ?

তখন আমি বললাম-

اَللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ  اَلْحَیُّ الْقَیُّوْمُ...

তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার বুকে চাপড় দিয়ে বললেন, ইলম তোমার জন্য সহজ হোক হে আবুল মুনযির। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮১০

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত দীর্ঘ একটি হাদীসে এসেছে, এক আগন্তুকের সাথে তার কথোপকথন হল। একপর্যায়ে সে বলল-

إِذَا أَوَيْتَ إِلَى فِرَاشِكَ فَاقْرَأْ آيَةَ الْكُرْسِيِّ لَنْ يَزَالَ مَعَكَ مِنْ اللَّهِ حَافِظٌ وَلَا يَقْرُبُكَ شَيْطَانٌ حَتَّى تُصْبِحَ.

তুমি রাতে যখন ঘুমাতে যাবে, আয়াতুল কুরসী পড়বে। তাহলে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে একজন হেফাযতকারী ফেরেশতা সকাল পর্যন্ত তোমার সঙ্গে থাকবেন। ফলে শয়তান তোমার কাছেও ভিড়তে পারবে না।

পুরো ঘটনা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-

صَدَقَكَ وَهُوَ كَذُوبٌ، ذَاكَ شَيْطَانٌ.

সে ছিল (ইবলিস) শয়তান। সে মিথ্যুক হলেও কথা সত্য বলেছে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০১০

সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন জিবরাঈল আলাইহিস সালাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে বসা ছিলেন। এমন সময় ওপরের দিক থেকে দরজা খোলার আওয়াজ শুনতে পেয়ে তিনি মাথা উঠালেন। তখন জিবরাঈল আ. বললেন, এটি আসমানের একটি দরজা। আজই প্রথম খোলা হল। আগে কখনো এ দরজা খোলা হয়নি।

সেখান থেকে একজন ফেরেশতা নেমে এলেন।

তিনি বললেন, এই ফেরেশতা আজকের আগে আর কখনো পৃথিবীতে আসেননি।

ফেরেশতা সালাম দিয়ে বললেন-

أَبْشِرْ بِنُورَيْنِ أُوتِيتَهُمَا لَمْ يُؤْتَهُمَا نَبِيٌّ قَبْلَكَ: فَاتِحَةُ الْكِتَابِ، وَخَوَاتِيمُ سُورَةِ الْبَقَرَةِ، لَنْ تَقْرَأَ بِحَرْفٍ مِنْهُمَا إِلَّا أُعْطِيتَهُ.

আপনি এমন দুটি আলোর সুসংবাদ গ্রহণ করুন, যা শুধু আপনাকে দেওয়া হয়েছে। আপনার পূর্বে আর কোনো নবীকে দেওয়া হয়নি। সূরা ফাতিহা এবং সূরা বাকারার শেষাংশ। আপনি এর যেকোনো হরফ পড়বেন তার মধ্যকার প্রার্থিত বিষয় আপনাকে দেওয়া হবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮০৬


হযরত আবু মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

مَنْ قَرَأَ بِالْآيَتَيْنِ مِنْ آخِرِ سُورَةِ الْبَقَرَةِ فِي لَيْلَةٍ كَفَتَاهُ.

যে ব্যক্তি রাতে সূরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত পড়বে তার জন্য তা (রাতের আমল হিসেবে এবং সকল অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়ার ক্ষেত্রে) যথেষ্ট হবে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০০৯


সূরা কাহফ

আবুদ দারদা রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

مَنْ حَفِظَ عَشْرَ آيَاتٍ مِنْ أَوَّلِ سُورَةِ الْكَهْفِ عُصِمَ مِنَ الدَّجَّالِ.

যে ব্যক্তি সূরা কাহফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করবে দাজ্জালের ফেতনা থেকে সে মুক্ত থাকবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮০৯; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৩২৩

অন্য বর্ণনায় সূরা কাহফের শেষ দশ আয়াত সম্পর্কে এই ফযীলতের কথা উল্লেখিত হয়েছে। দ্রষ্টব্য : সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৭৮৬


হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

مَنْ قَرَأَ سُورَةَ الْكَهْفِ فِي يَوْمِ الْجُمُعَةِ أَضَاءَ لَهُ مِنَ النُّورِ مَا بَيْنَ الْجُمُعَتَيْنِ.

যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহফ তিলাওয়াত করবে, তাকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত একটি নূর বেষ্টন করে রাখবে। -মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৩৩৯২;  সুনানে কুবরা বাইহাকী, হাদীস ৫৯৯৬


হাদীসটির সনদ হাসান

সূরা ইয়া সীন

জুনদুব রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম বলেন-

مَنْ قَرَأَ یٰسٓ فِي لَيْلَةٍ ابْتِغَاءَ وَجْهِ اللهِ غُفِرَ لَهُ.

যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির জন্য রাতের বেলা সূরা ইয়াসীন তিলাওয়াত করবে, তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। -সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ২৫৭৪, তাফসীরে ইবনে কাসীর ৬/৫৬২


হাদীসটি সালিহ লিল আমাল

আতা ইবনে আবী রাবাহ রাহ. বলেন, আমার কাছে এই হাদীস পেঁৗছেছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

مَنْ قَرَأَ یٰسٓ فِي صَدْرِ النَّهَارِ، قُضِيَتْ حَوَائِجُهُ.

(إسناده إلى عطاء صحيح)


যে ব্যক্তি দিনের শুরুতে সূরা ইয়া সীন তিলাওয়াত করবে তার যাবতীয় প্রয়োজন পুরা করা হবে। -সুনানে দারেমী ২/৫৪৯


সূরা মুলক

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

سُورَةٌ مِنَ الْقُرْآنِ ثَلَاثُونَ آيَةً، تَشْفَعُ لِصَاحِبِهَا حَتَّى يُغْفَرَ لَهُ: تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ.

কুরআনে ত্রিশ আয়াত বিশিষ্ট একটি সূরা আছে। যে ব্যক্তি নিয়মিত সেই সূরা তিলাওয়াত করবে তার জন্য ক্ষমা আদায় করা পর্যন্ত সূরাটি সুপারিশ করতে থাকবে। সেই সূরা হল, ‘তাবারাকাল্লাযি বিইয়াদিহিল মুলক’। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৪০০; জামে তিরমিযী, হাদীস ২৮৯১; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৭৮৭


ইমাম তিরমিযী রাহ. হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।

আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

سُورَةٌ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هِيَ إِلَّا ثَلَاثُونَ آيَةً، خَاصَمَتْ عَنْ صَاحِبِهَا حَتَّى أَدْخَلَتْهُ الْجَنَّةَ، وَهِيَ سُورَةُ تَبَارَكَ.

কুরআনে ত্রিশ আয়াত বিশিষ্ট একটি সূরা আছে। নিয়মিত যে ব্যক্তি সেই সূরা তিলাওয়াত করবে তার পক্ষে সে তর্ক করবে। একপর্যায়ে তাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। সেটি হল সূরা মুলক। -আলমুজামুল আউসাত তবারানী, হাদীস ৩৬৫৪; আলআহাদীসুল মুখতারাহ লিল মাকদিসী, হাদীস ১৭৩৮


হাদীসটি হাসান।

[হাইসামী রাহ. বলেন-

رواه الطبراني في الصغير والأوسط، ورِجَالُه رِجَالُ الصَّحِيحِ.

দ্রষ্টব্য : মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৭/১২৭]

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন-

مَنْ قَرَأَ تَبٰرَكَ الَّذِیْ بِیَدِهِ الْمُلْكُ كُلَّ لَيْلَةٍ مَنَعَهُ اللهُ بِهَا مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ، وَكُنَّا فِي عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نُسَمِّيهَا الْمَانِعَةَ، وَإِنَّهَا فِي كِتَابِ اللهِ سُورَةٌ مَنْ قَرَأَ بِهَا فِي كُلِّ لَيْلَةٍ فَقَدْ أَكْثَرَ وَأَطَابَ.

যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সূরা মুলক পড়বে আল্লাহ তাআলা তাকে এর ওসিলায় কবরের আযাব থেকে মুক্ত রাখবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যামানায় এই সূরাকে আমরা বলতাম- ‘মানেআ’ অর্থাৎ কবরের আযাব প্রতিরোধকারী। যে ব্যক্তি প্রতি রাতে এই সূরা তিলাওয়াত করল সে অনেক তিলাওয়াত করল এবং উত্তম কাজ করল। -সুনানে কুবরা নাসায়ী, হাদীস ১০৫৪৭; আলমুজামুল কাবীর তবারানী, হাদীস ১০২৫৪; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৩৮৩৯


হাদীসটি হাসান।

[হাইসামী রাহ. বলেন-

رواه الطبراني في الكبير والأوسط، ورِجَالُهُ ثِقات.

দ্রষ্টব্য : মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৭/১২৭]


সূরা ইখলাস

আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন সাহাবায়ে কেরামকে লক্ষ্য করে বললেন-

أَيَعْجِزُ أَحَدُكُمْ أَنْ يَقْرَأَ ثُلُثَ الْقُرْآنِ فِي لَيْلَةٍ.

তোমাদের কেউ কি রাতের বেলা কুরআন মাজীদের এক তৃতীয়াংশ তিলাওয়াত করতে পারবে?

বিষয়টি তাঁদের কাছে কঠিন মনে হল।

তাঁরা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের কে তা পারবে?

তখন তিনি বললেন-

اللهُ الْوَاحِدُ الصَّمَدُ ثُلُثُ الْقُرْآنِ.

অর্থাৎ সূরা ইখলাস কুরআন মাজীদের এক তৃতীয়াংশ (তিলাওয়াতের সমান)। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০১৫

সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস

আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত-

كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ، نَفَثَ فِي كَفَّيْهِ بِقُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ وَبِالْمُعَوِّذَتَيْنِ جَمِيعًا، ثُمَّ يَمْسَحُ بِهِمَا وَجْهَهُ، وَمَا بَلَغَتْ يَدَاهُ مِنْ جَسَدِهِ. قَالَتْ عَائِشَةُ: فَلَمَّا اشْتَكَى كَانَ يَأْمُرُنِي أَنْ أَفْعَلَ ذَلِكَ بِهِ.

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে যখন বিছানায় আসতেন, (ঘুমানোর আগে) সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়ে দুই হাতের তালুতে (একত্র করে) ফুঁ দিতেন। এরপর সেই দুই হাতে চেহারা ও পুরো শরীর যতদূর সম্ভব মুছে নিতেন। আয়েশা রা. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুস্থ হয়ে গেলে আমাকে আদেশ করতেন, আমি তা (সূরাগুলো পড়ে হাতের তালুতে ফুঁ দিয়ে শরীর মোছার কাজ) করে দিতাম। -সহীহ বুখারী, হাদীস  ৫৭৪৮


অন্য রেওয়ায়েতে আছে-

يَمْسَحُ بِهِمَا مَا اسْتَطَاعَ مِنْ جَسَدِهِ يَبْدَأُ بِهِمَا عَلَى رَأْسِهِ وَوَجْهِهِ وَمَا أَقْبَلَ مِنْ جَسَدِهِ يَفْعَلُ ذَلِكَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ.

দুই হাতে পুরো শরীর যতদূর সম্ভব মুছে নিতেন। মোছা শুরু করতেন মাথা  চেহারা ও শরীরের সম্মুখভাগ থেকে। তিনবার এমন করতেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০১৭

আবদুল্লাহ ইবনে খুবাইব রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ، وَالمُعَوِّذَتَيْنِ حِينَ تُمْسِي وَتُصْبِحُ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ تَكْفِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ.

সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস সকাল সন্ধ্যা তিনবার করে পড়লে তা তোমার জন্য সকল সমস্যা ও অনিষ্ট থেকে (রক্ষার ক্ষেত্রে) যথেষ্ট হবে। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৫৭৫; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫০৮২


হাদীসটি হাসান।

একটি জরুরি কথা

আপাতত এখানে এই কয়েকটি বর্ণনাই উল্লেখ করা হল।

এক্ষেত্রে যে বিষয়টি আমাদের খেয়াল রাখা উচিত সেটি হল, আমরা যেমন কুরআন মাজীদের বিভিন্ন আয়াত ও সূরা সহীহ হাদীসে বর্ণিত বিভিন্ন ফযীলত লাভ করার উদ্দেশ্যে তিলাওয়াত করি, তেমনি- বরং তারচেয়েও বেশি গুরুত্বের সাথে উচিত পুরো কুরআন মাজীদ তিলাওয়াতের ব্যাপারে যত্নশীল হওয়া। সেইসাথে তিলাওয়াত করা উচিত তাজবীদ ও তারতীলের সাথে। তিলাওয়াত হওয়া উচিত তাদাব্বুর ও তাফাক্কুরের সাথে। যেন আমরা কুরআন থেকে নসীহত গ্রহণ করতে পারি এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কুরআনের হেদায়েত ও নির্দেশনা লাভ করতে পারি। বিশেষ করে যারা বুঝে বুঝে কুরআন তিলাওয়াতের সামর্থ্য রাখেন, তাদের জন্য তো অবশ্যই এ বিষয়ে অধিক যত্নশীল হওয়া উচিত। আর যারা বর্তমানে সমর্থ নন, তাদেরও উচিত সহীহ শুদ্ধ তিলাওয়াত শেখার পর কুরআন বোঝার চেষ্টা করা। ইরশাদ হয়েছে-

كِتٰبٌ اَنْزَلْنٰهُ اِلَیْكَ مُبٰرَكٌ لِّیَدَّبَّرُوْۤا اٰیٰتِهٖ وَ لِیَتَذَكَّرَ اُولُوا الْاَلْبَابِ.

(হে রাসূল!) এটি এক বরকতময় কিতাব, যা আমি তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতের মধ্যে চিন্তা করে এবং যাতে বোধসম্পন্ন ব্যক্তিগণ উপদেশ গ্রহণ করে। -সূরা সফফাত (৩৮) : ২৯

সাহাবী হুযাইফা রা. নবীজীর কুরআন তিলাওয়াতের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বলেন-

يَقْرَأُ مُتَرَسِّلًا. إِذَا مَرَّ بِآيَةٍ فِيهَا تَسْبِيحٌ سَبَّحَ. وَإِذَا مَرَّ بِسُؤَالٍ سَأَلَ. وَإِذَا مَرَّ بِتَعَوُّذٍ تَعَوَّذَ.

 তিনি ধীরে ধীরে তিলাওয়াত করছেন। যখন এমন কোনো আয়াত পড়েছেন, যাতে তাসবীহের কথা আছে, তিনি তাসবীহ পড়েছেন। যেখানে চাওয়ার কথা আছে, চেয়েছেন। যেখানে কোনো কিছু থেকে আশ্রয় প্রার্থনার কথা আছে, আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭৭২


আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এভাবে তিলাওয়াত করার তাওফীক দান করুন। অধিক পরিমাণে তিলাওয়াত করার এবং কুরআনের মাধ্যমে জীবন আলোকিত করার সৌভাগ্য নসীব করুন


***********************************************************************************



No comments:

Post a Comment