Translate

Manu

Marquee

কিছু কথাঃ পৃথিবীতে সর্বশ্রেষ্ঠ্য কাজ হলো নামাজ পড়া, তারপর-কোরআন পড়া, তারপর-হালাল রিজিকের অন্নেষণ করা।

Slide

  • slider free downloadলা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ(স.)
  • g src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjANOEzkcBdXRgDdVW1EmZILtDChnJiFaGYBJPcRHsEwlpV3s_DYA7chNB-TaSBNyQsh2KB7r0BIk4JMDs7FfMCjVEaVjnP34cIgVrwjNUyP3uz8SXlMIJ6tvQpN_lQihGE_1NkeZ6cI38/s1600/0000000.jpg" alt="free image slider" title="ফাইয়ার ইবাকুয়েশন ড্রিল- বিনোদা নীটওয়্যার লিমিটেড" id="wows1_1" />কথা বলছেনঃ আব্দুল্লাহ-আল-মুক্তাদী, নির্বাহী-বিনোদা নীটওয়্যার লিঃ/li>
  • slider jquery freeBinoda Knitwear Limited
  • jquery slider freeThis is the largest amphitheatre ever built.
  • slider jquery freeBinoda Knitwear Limited
  • slider jquery freeআলমাছ কাজী কারিমিয়া মাদরাসা
  • slider jquery freeআলমাছ কাজী কারিমিয়া মাদরাসা
  • slider jquery freeআলমাছ কাজী কারিমিয়া মাদরাসা

Monday, January 22, 2024

 কুরআন মাজীদের কয়েকটি আয়াত ও সূরা

বিশেষ কিছু ফযীলত

 

মাওলানা মুহাম্মাদ তাওহীদুল ইসলাম তায়্যিব


বিশুদ্ধভাবে কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করতে পারা মুমিনের জীবনে পরম সৌভাগ্য। এ সৌভাগ্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের এক মহাদান।


কুরআন মাজীদকে আল্লাহ তাআলা ‘লওহে মাহফুযে’ সংরক্ষিত করেছেন। এরপর হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালামের মাধ্যমে তাঁর সবচে প্রিয়, সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর নাযিল করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে এই কুরআন তিলাওয়াত করেছেন। তাঁর সাহাবীগণ তিলাওয়াত করেছেন। যুগে যুগে উম্মতের শ্রেষ্ঠ মনীষীরা তিলাওয়াত করেছেন। এর চেয়েও আনন্দের কথা হল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবায়ে কেরাম এবং আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণ এই কুরআন যেভাবে তিলাওয়াত করেছেন এখনো সেভাবেই সংরক্ষিত আছে। আমার মতো গোনাহগারের জন্য সেই মহাগ্রন্থ-কুরআনের শব্দ-বাক্য-মর্ম উচ্চারণ-অনুধাবন করতে পারা মহা সৌভাগ্য নয় তো কী?


কুরআন মাজীদে এক শ চৌদ্দটি সূরা এবং ছয় হাজার দুই শ ছত্রিশটি আয়াত রয়েছে। কুরআনের প্রতিটি সূরা, প্রতিটি আয়াত এবং প্রতিটি হরফ তিলাওয়াতের সওয়াব ও ফযীলতের পাশাপাশি কিছু আয়াত ও সূরার বিশেষ কিছু ফযীলতের কথাও উল্লেখিত হয়েছে হাদীস শরীফে। তন্মধ্য থেকে কয়েকটি আয়াত ও সূরার ফযীলত এখানে আলোচনা করা হল।


সূরা ফাতিহা

আবু সায়ীদ ইবনুল মুআল্লা রা. বলেন, আমি একদিন মসজিদে নামায পড়ছিলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন-

لَأُعَلِّمَنَّكَ سُورَةً هِيَ أَعْظَمُ السُّوَرِ فِي الْقُرْآنِ، قَبْلَ أَنْ تَخْرُجَ مِنَ الْمَسْجِدِ.

তুমি মসজিদ থেকে বের হওয়ার আগেই তোমাকে এমন একটি সূরা শেখাব, যা কুরআন মাজীদের সবচে মহান সূরা।... এরপর বললেন, (সেটি হল) আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন (অর্থাৎ সূরা ফাতিহা)। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৪৪৭৪


আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

إِذَا قَالَ الْإِمَامُ : غَیْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَیْهِمْ وَ لَا الضَّآلِّیْنَ فَقُولُوا: آمِينَ، فَإِنَّهُ مَنْ وَافَقَ قَوْلُهُ قَوْلَ الْمَلَائِكَةِ، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ.


ইমাম যখন বলেন-

غَیْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَیْهِمْ وَ لَا الضَّآلِّیْنَ.

তখন তোমরা ‘আমীন’ বল। (কেননা ফেরেশতারাও তখন আমীন বলে) যার আমীন বলা ফেরেশতাদের বলার সাথে মিলে যাবে তার অতীত জীবনের গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৭৮২, ৬৪০২


আয়াতুল কুরসী

উবাই ইবনে কা‘ব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন আবুল মুনযিরকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আবুল মুনযির, তুমি কি জানো আল্লাহর কিতাবের যে আয়াতগুলো তুমি হিফয করেছ তার মধ্যে কোন্ আয়াত শ্রেষ্ঠ?

আবুল মুনযির বলেন, আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন।

তিনি আবার বললেন, হে আবুল মুনযির, তুমি কি জানো আল্লাহর কিতাবের যে আয়াতগুলো তুমি হিফয করেছ তার মধ্যে কোন্ আয়াত শ্রেষ্ঠ?

তখন আমি বললাম-

اَللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ  اَلْحَیُّ الْقَیُّوْمُ...

তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার বুকে চাপড় দিয়ে বললেন, ইলম তোমার জন্য সহজ হোক হে আবুল মুনযির। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮১০

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত দীর্ঘ একটি হাদীসে এসেছে, এক আগন্তুকের সাথে তার কথোপকথন হল। একপর্যায়ে সে বলল-

إِذَا أَوَيْتَ إِلَى فِرَاشِكَ فَاقْرَأْ آيَةَ الْكُرْسِيِّ لَنْ يَزَالَ مَعَكَ مِنْ اللَّهِ حَافِظٌ وَلَا يَقْرُبُكَ شَيْطَانٌ حَتَّى تُصْبِحَ.

তুমি রাতে যখন ঘুমাতে যাবে, আয়াতুল কুরসী পড়বে। তাহলে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে একজন হেফাযতকারী ফেরেশতা সকাল পর্যন্ত তোমার সঙ্গে থাকবেন। ফলে শয়তান তোমার কাছেও ভিড়তে পারবে না।

পুরো ঘটনা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-

صَدَقَكَ وَهُوَ كَذُوبٌ، ذَاكَ شَيْطَانٌ.

সে ছিল (ইবলিস) শয়তান। সে মিথ্যুক হলেও কথা সত্য বলেছে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০১০

সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন জিবরাঈল আলাইহিস সালাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে বসা ছিলেন। এমন সময় ওপরের দিক থেকে দরজা খোলার আওয়াজ শুনতে পেয়ে তিনি মাথা উঠালেন। তখন জিবরাঈল আ. বললেন, এটি আসমানের একটি দরজা। আজই প্রথম খোলা হল। আগে কখনো এ দরজা খোলা হয়নি।

সেখান থেকে একজন ফেরেশতা নেমে এলেন।

তিনি বললেন, এই ফেরেশতা আজকের আগে আর কখনো পৃথিবীতে আসেননি।

ফেরেশতা সালাম দিয়ে বললেন-

أَبْشِرْ بِنُورَيْنِ أُوتِيتَهُمَا لَمْ يُؤْتَهُمَا نَبِيٌّ قَبْلَكَ: فَاتِحَةُ الْكِتَابِ، وَخَوَاتِيمُ سُورَةِ الْبَقَرَةِ، لَنْ تَقْرَأَ بِحَرْفٍ مِنْهُمَا إِلَّا أُعْطِيتَهُ.

আপনি এমন দুটি আলোর সুসংবাদ গ্রহণ করুন, যা শুধু আপনাকে দেওয়া হয়েছে। আপনার পূর্বে আর কোনো নবীকে দেওয়া হয়নি। সূরা ফাতিহা এবং সূরা বাকারার শেষাংশ। আপনি এর যেকোনো হরফ পড়বেন তার মধ্যকার প্রার্থিত বিষয় আপনাকে দেওয়া হবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮০৬


হযরত আবু মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

مَنْ قَرَأَ بِالْآيَتَيْنِ مِنْ آخِرِ سُورَةِ الْبَقَرَةِ فِي لَيْلَةٍ كَفَتَاهُ.

যে ব্যক্তি রাতে সূরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত পড়বে তার জন্য তা (রাতের আমল হিসেবে এবং সকল অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়ার ক্ষেত্রে) যথেষ্ট হবে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০০৯


সূরা কাহফ

আবুদ দারদা রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

مَنْ حَفِظَ عَشْرَ آيَاتٍ مِنْ أَوَّلِ سُورَةِ الْكَهْفِ عُصِمَ مِنَ الدَّجَّالِ.

যে ব্যক্তি সূরা কাহফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করবে দাজ্জালের ফেতনা থেকে সে মুক্ত থাকবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮০৯; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৩২৩

অন্য বর্ণনায় সূরা কাহফের শেষ দশ আয়াত সম্পর্কে এই ফযীলতের কথা উল্লেখিত হয়েছে। দ্রষ্টব্য : সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৭৮৬


হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

مَنْ قَرَأَ سُورَةَ الْكَهْفِ فِي يَوْمِ الْجُمُعَةِ أَضَاءَ لَهُ مِنَ النُّورِ مَا بَيْنَ الْجُمُعَتَيْنِ.

যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহফ তিলাওয়াত করবে, তাকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত একটি নূর বেষ্টন করে রাখবে। -মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৩৩৯২;  সুনানে কুবরা বাইহাকী, হাদীস ৫৯৯৬


হাদীসটির সনদ হাসান

সূরা ইয়া সীন

জুনদুব রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম বলেন-

مَنْ قَرَأَ یٰسٓ فِي لَيْلَةٍ ابْتِغَاءَ وَجْهِ اللهِ غُفِرَ لَهُ.

যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির জন্য রাতের বেলা সূরা ইয়াসীন তিলাওয়াত করবে, তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। -সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ২৫৭৪, তাফসীরে ইবনে কাসীর ৬/৫৬২


হাদীসটি সালিহ লিল আমাল

আতা ইবনে আবী রাবাহ রাহ. বলেন, আমার কাছে এই হাদীস পেঁৗছেছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

مَنْ قَرَأَ یٰسٓ فِي صَدْرِ النَّهَارِ، قُضِيَتْ حَوَائِجُهُ.

(إسناده إلى عطاء صحيح)


যে ব্যক্তি দিনের শুরুতে সূরা ইয়া সীন তিলাওয়াত করবে তার যাবতীয় প্রয়োজন পুরা করা হবে। -সুনানে দারেমী ২/৫৪৯


সূরা মুলক

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

سُورَةٌ مِنَ الْقُرْآنِ ثَلَاثُونَ آيَةً، تَشْفَعُ لِصَاحِبِهَا حَتَّى يُغْفَرَ لَهُ: تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ.

কুরআনে ত্রিশ আয়াত বিশিষ্ট একটি সূরা আছে। যে ব্যক্তি নিয়মিত সেই সূরা তিলাওয়াত করবে তার জন্য ক্ষমা আদায় করা পর্যন্ত সূরাটি সুপারিশ করতে থাকবে। সেই সূরা হল, ‘তাবারাকাল্লাযি বিইয়াদিহিল মুলক’। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৪০০; জামে তিরমিযী, হাদীস ২৮৯১; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৭৮৭


ইমাম তিরমিযী রাহ. হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।

আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

سُورَةٌ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هِيَ إِلَّا ثَلَاثُونَ آيَةً، خَاصَمَتْ عَنْ صَاحِبِهَا حَتَّى أَدْخَلَتْهُ الْجَنَّةَ، وَهِيَ سُورَةُ تَبَارَكَ.

কুরআনে ত্রিশ আয়াত বিশিষ্ট একটি সূরা আছে। নিয়মিত যে ব্যক্তি সেই সূরা তিলাওয়াত করবে তার পক্ষে সে তর্ক করবে। একপর্যায়ে তাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। সেটি হল সূরা মুলক। -আলমুজামুল আউসাত তবারানী, হাদীস ৩৬৫৪; আলআহাদীসুল মুখতারাহ লিল মাকদিসী, হাদীস ১৭৩৮


হাদীসটি হাসান।

[হাইসামী রাহ. বলেন-

رواه الطبراني في الصغير والأوسط، ورِجَالُه رِجَالُ الصَّحِيحِ.

দ্রষ্টব্য : মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৭/১২৭]

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন-

مَنْ قَرَأَ تَبٰرَكَ الَّذِیْ بِیَدِهِ الْمُلْكُ كُلَّ لَيْلَةٍ مَنَعَهُ اللهُ بِهَا مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ، وَكُنَّا فِي عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نُسَمِّيهَا الْمَانِعَةَ، وَإِنَّهَا فِي كِتَابِ اللهِ سُورَةٌ مَنْ قَرَأَ بِهَا فِي كُلِّ لَيْلَةٍ فَقَدْ أَكْثَرَ وَأَطَابَ.

যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সূরা মুলক পড়বে আল্লাহ তাআলা তাকে এর ওসিলায় কবরের আযাব থেকে মুক্ত রাখবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যামানায় এই সূরাকে আমরা বলতাম- ‘মানেআ’ অর্থাৎ কবরের আযাব প্রতিরোধকারী। যে ব্যক্তি প্রতি রাতে এই সূরা তিলাওয়াত করল সে অনেক তিলাওয়াত করল এবং উত্তম কাজ করল। -সুনানে কুবরা নাসায়ী, হাদীস ১০৫৪৭; আলমুজামুল কাবীর তবারানী, হাদীস ১০২৫৪; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৩৮৩৯


হাদীসটি হাসান।

[হাইসামী রাহ. বলেন-

رواه الطبراني في الكبير والأوسط، ورِجَالُهُ ثِقات.

দ্রষ্টব্য : মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৭/১২৭]


সূরা ইখলাস

আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন সাহাবায়ে কেরামকে লক্ষ্য করে বললেন-

أَيَعْجِزُ أَحَدُكُمْ أَنْ يَقْرَأَ ثُلُثَ الْقُرْآنِ فِي لَيْلَةٍ.

তোমাদের কেউ কি রাতের বেলা কুরআন মাজীদের এক তৃতীয়াংশ তিলাওয়াত করতে পারবে?

বিষয়টি তাঁদের কাছে কঠিন মনে হল।

তাঁরা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের কে তা পারবে?

তখন তিনি বললেন-

اللهُ الْوَاحِدُ الصَّمَدُ ثُلُثُ الْقُرْآنِ.

অর্থাৎ সূরা ইখলাস কুরআন মাজীদের এক তৃতীয়াংশ (তিলাওয়াতের সমান)। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০১৫

সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস

আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত-

كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ، نَفَثَ فِي كَفَّيْهِ بِقُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ وَبِالْمُعَوِّذَتَيْنِ جَمِيعًا، ثُمَّ يَمْسَحُ بِهِمَا وَجْهَهُ، وَمَا بَلَغَتْ يَدَاهُ مِنْ جَسَدِهِ. قَالَتْ عَائِشَةُ: فَلَمَّا اشْتَكَى كَانَ يَأْمُرُنِي أَنْ أَفْعَلَ ذَلِكَ بِهِ.

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে যখন বিছানায় আসতেন, (ঘুমানোর আগে) সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়ে দুই হাতের তালুতে (একত্র করে) ফুঁ দিতেন। এরপর সেই দুই হাতে চেহারা ও পুরো শরীর যতদূর সম্ভব মুছে নিতেন। আয়েশা রা. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুস্থ হয়ে গেলে আমাকে আদেশ করতেন, আমি তা (সূরাগুলো পড়ে হাতের তালুতে ফুঁ দিয়ে শরীর মোছার কাজ) করে দিতাম। -সহীহ বুখারী, হাদীস  ৫৭৪৮


অন্য রেওয়ায়েতে আছে-

يَمْسَحُ بِهِمَا مَا اسْتَطَاعَ مِنْ جَسَدِهِ يَبْدَأُ بِهِمَا عَلَى رَأْسِهِ وَوَجْهِهِ وَمَا أَقْبَلَ مِنْ جَسَدِهِ يَفْعَلُ ذَلِكَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ.

দুই হাতে পুরো শরীর যতদূর সম্ভব মুছে নিতেন। মোছা শুরু করতেন মাথা  চেহারা ও শরীরের সম্মুখভাগ থেকে। তিনবার এমন করতেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০১৭

আবদুল্লাহ ইবনে খুবাইব রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ، وَالمُعَوِّذَتَيْنِ حِينَ تُمْسِي وَتُصْبِحُ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ تَكْفِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ.

সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস সকাল সন্ধ্যা তিনবার করে পড়লে তা তোমার জন্য সকল সমস্যা ও অনিষ্ট থেকে (রক্ষার ক্ষেত্রে) যথেষ্ট হবে। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৫৭৫; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫০৮২


হাদীসটি হাসান।

একটি জরুরি কথা

আপাতত এখানে এই কয়েকটি বর্ণনাই উল্লেখ করা হল।

এক্ষেত্রে যে বিষয়টি আমাদের খেয়াল রাখা উচিত সেটি হল, আমরা যেমন কুরআন মাজীদের বিভিন্ন আয়াত ও সূরা সহীহ হাদীসে বর্ণিত বিভিন্ন ফযীলত লাভ করার উদ্দেশ্যে তিলাওয়াত করি, তেমনি- বরং তারচেয়েও বেশি গুরুত্বের সাথে উচিত পুরো কুরআন মাজীদ তিলাওয়াতের ব্যাপারে যত্নশীল হওয়া। সেইসাথে তিলাওয়াত করা উচিত তাজবীদ ও তারতীলের সাথে। তিলাওয়াত হওয়া উচিত তাদাব্বুর ও তাফাক্কুরের সাথে। যেন আমরা কুরআন থেকে নসীহত গ্রহণ করতে পারি এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কুরআনের হেদায়েত ও নির্দেশনা লাভ করতে পারি। বিশেষ করে যারা বুঝে বুঝে কুরআন তিলাওয়াতের সামর্থ্য রাখেন, তাদের জন্য তো অবশ্যই এ বিষয়ে অধিক যত্নশীল হওয়া উচিত। আর যারা বর্তমানে সমর্থ নন, তাদেরও উচিত সহীহ শুদ্ধ তিলাওয়াত শেখার পর কুরআন বোঝার চেষ্টা করা। ইরশাদ হয়েছে-

كِتٰبٌ اَنْزَلْنٰهُ اِلَیْكَ مُبٰرَكٌ لِّیَدَّبَّرُوْۤا اٰیٰتِهٖ وَ لِیَتَذَكَّرَ اُولُوا الْاَلْبَابِ.

(হে রাসূল!) এটি এক বরকতময় কিতাব, যা আমি তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতের মধ্যে চিন্তা করে এবং যাতে বোধসম্পন্ন ব্যক্তিগণ উপদেশ গ্রহণ করে। -সূরা সফফাত (৩৮) : ২৯

সাহাবী হুযাইফা রা. নবীজীর কুরআন তিলাওয়াতের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বলেন-

يَقْرَأُ مُتَرَسِّلًا. إِذَا مَرَّ بِآيَةٍ فِيهَا تَسْبِيحٌ سَبَّحَ. وَإِذَا مَرَّ بِسُؤَالٍ سَأَلَ. وَإِذَا مَرَّ بِتَعَوُّذٍ تَعَوَّذَ.

 তিনি ধীরে ধীরে তিলাওয়াত করছেন। যখন এমন কোনো আয়াত পড়েছেন, যাতে তাসবীহের কথা আছে, তিনি তাসবীহ পড়েছেন। যেখানে চাওয়ার কথা আছে, চেয়েছেন। যেখানে কোনো কিছু থেকে আশ্রয় প্রার্থনার কথা আছে, আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭৭২


আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এভাবে তিলাওয়াত করার তাওফীক দান করুন। অধিক পরিমাণে তিলাওয়াত করার এবং কুরআনের মাধ্যমে জীবন আলোকিত করার সৌভাগ্য নসীব করুন


***********************************************************************************



Tuesday, January 2, 2024

 শোকাহত ২০২৩ : যে আলেমদের হারিয়েছি আমরা...

নতুন আরেকটি ইংরেজি বর্ষের সূচনা হলো সমগ্র বিশ্বে-2024। প্রতিটি বছরের ন্যায় ২০২৩ সালটিও ছিলো নানা ঘটনাবহুল। সুখ-দুখ, হাসি-কান্না, আনন্দ-উৎসব নানা উপাখ্যানের সঙ্গে শোকের আবহও ছিল দেশের বরেণ্য আলেমেদের শেষ বিদায়ে। ২০২৩ সালে উল্লেখযোগ্য যেসব আলেম মহাকালের যাত্রায় শামিল হয়েছেন (মৃত্যু তারিখ ভিত্তিক) তাঁদের তালিকা তুলে ধরা হলো-


১৪ জানুয়ারি ২০২৩

পটিয়া মাদরাসার প্রবীণ মুহাদ্দিস মাওলানা মুহাম্মদ রফীক আহমদ

২০২৩ সালের শুরুতেই ইন্তেকাল করেন চট্টগ্রামের পটিয়া মাদরাসার (আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া, পটিয়া) প্রবীণ মুহাদ্দিস মাওলানা মুহাম্মদ রফীক আহমদ। ১৪ জানুয়ারি (শনিবার) ইন্তেকাল করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৮৩ বছর। উপমহাদেশের খ্যাতিমান আলেম পটিয়া মাদরাসার সাবেক শাইখুল হাদিস আল্লামা আল-ইমাম আহমদ (রহ.) ছিলেন মাওলানা মুহাম্মদ রফীক আহমদের বাবা। মাওলানা রফীক আহমদ ১৩৬৪ হিজরি মোতাবেক ১৯৪৫ সালে চট্টগ্রামের চাঁন্দগাঁও থানার অন্তর্গত মোহরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। চট্টগ্রামের মোজাহের উলুম মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাওলানা ইসমাইল তাকে মধু পান করান এবং তার কানে আজান দেন। ১৯৫১ সালে পটিয়া মাদরাসায় ভর্তি হয়ে মুফতি আযীযুল হক (রহ.)-এর কাছে পবিত্র কোরআনের প্রথম পাঠ গ্রহণ করেন। ১৩৮৬ হিজরি মোতাবেক ১৯৬৭ সালে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন। আঞ্জুমানে ইত্তিহাদুল মাদারিস বাংলাদেশের অধীনে দাওরায়ে হাদিসের বার্ষিক পরীক্ষায় তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেন। ১৯৬৯ সালে রাউজান ইমদাদুল ইসলাম মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। ১৩৯১ হিজরি মোতাবেক ১৯৭২ সালে এস এস সি পরীক্ষায় অংশ নেন। ১৯৭৪ সালে নানুপুর ওবাইদিয়া মাদারাসায় দাওরায়ে হাদিস শুরু করা হলে তিনি তাতে মুহাদ্দিস হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে তিনি পটিয়া মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। পটিয়া মাদরাসায় তিনি হাদিস ও তাফসির বিষয়ক পাঠদানের পাশাপাশি ছাত্রাবাস তত্তাবধায়কের দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ সময় তিনি এই মাদরাসার তাফসির বিভাগের প্রধান ছিলেন। হাদিস, ফিকাহ, তাফসিরসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি অনেক ব্যাখ্যাগ্রন্থ রচনা করেন। তার কিছু রচনা ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাছে ব্যাপক সমাদৃত। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলীর মধ্যে রয়েছে : ১. সহিহ মুসলিম গ্রন্থের ব্যাখ্যাগ্রন্থ ইফাদাতুল মুসলিম। ২. মিশকাতুল মাসাবিহের প্রসিদ্ধ ব্যাখ্যাগ্রন্থ ইজাহুল মিশকাত। ৩. আকরাবুল ওয়াসায়েল ইলা শরহিশ শামায়েল। ৪. কুররাতুল আইনাইন। ৫. দরসে হিদায়া। ৬. আল কালামুল মুতাবার ফি তাউজিহি নুরি সায়্যিদিল বাশার। ৭. ইরশাদুত্তালিবিন ফি আহওয়ালিল মুসাল্লিফিন। ৮. জাহরুন নুজুম ফি মারিফাতিল ফুনুনি ওয়াল উলুম। ৯. আল-ইনশাউল জাদীদ মাআল লুগাতি ওয়াল খিতাবাত। ১০. হাদিস পরিচিতি : ভারত-বাংলাদেশের প্রাতঃস্মরণীয় আউলিয়া ও মুহাদ্দিসিনসহ ইত্যাদি।


১৫ জানুয়ারি ২০২৩

আরজাবাদ মাদরাসার প্রবীণ শিক্ষক হাফেজ আব্দুল হামিদ

পটিয়া মাদরাসার প্রবীণ মুহাদ্দিস মাওলানা মুহাম্মদ রফীক আহমদের ইন্তেকালের একদিন পর ১৫ জানুয়ারি (রোববার) ইন্তেকাল করেন রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী জামিয়া হোসাইনিয়া ইসলামিয়া আরজাবাদ মাদরাসার হিফজ বিভাগের প্রবীণ উস্তাদ হাফেজ আব্দুল হামিদ। ১৯৭৪ সনে ২০শে ফেব্রুয়ারি বাগেরহাট জেলার চিতলমারী থানার খড়মখালী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আব্দুল হামিদ। বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাট থানার জামিয়া হালিমিয়া ইসলামিয়া উদয়পুর মাদরাসায় লেখাপড়ার সূচনা। এই মাদরাসায় কায়দা থেকে নিয়ে হেফজ সম্পন্ন করেন। এরপর ১৯৮৯ সালে বাঁশবাড়িয়া ঝনঝনিয়া ইসলামিয়া মাদরাসায় ইবতিদাইয়্যাহ জামাতে ভর্তি হন। সেখানে ২ বছর পড়ে ১৯৯০ সালে চট্টগ্রামের হামিউস সুন্নাহ মেখল মাদরাসায় ভর্তি হন। নাহবেমীর পর্যন্ত পড়ার পর পারিবারিক সমস্যার কারণে তিনি শিক্ষাজীবনের ইতি টানেন।


১৯৯৮ সালে ঢাকার কাজীপাড়ায় বাইতুস সালাম হাফিজিয়া মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন সূচনা করেন। ৩ বছর সেখানে শিক্ষকতার পর ২০০১ সালে মোহাম্মদপুর জামিয়া রাহমানিয়ায় নিয়োগ পান। ২০০৪ সাল পর্যন্ত সেখানে ছিলেন। এরপর ২০০৫ সাল থেকে নিয়ে মৃত্যু অবধি ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ জামিয়া হোসাইনিয়া ইসলামিয়া আরজাবাদ মাদরাসায় অত্যন্ত সুনামের সাথে হেফজ বিভাগের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়ে গেছেন।


১৭ জানুয়ারি ২০২৩

শিলালিপি গবেষক ও ভাষাবিদ মাওলানা মুহাম্মদ নুরুদ্দিন ফতেহপুরী

আরজাবাদ মাদরাসার প্রবীণ শিক্ষক হাফেজ আব্দুল হামিদের ইন্তেকালের দুইদিন পরে ১৭ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) ইন্তেকাল করেন শিলালিপি গবেষক ও ভাষাবিদ মাওলানা মুহাম্মদ নুরুদ্দিন ফতেহ্পুরী। মাওলানা ফতেহ্পুরী ছিলেন শিলালিপি গবেষক, আরবি-ফারসি-উর্দু ভাষার পণ্ডিত এবং ঢাকার স্থাপত্য বিষয়ক গ্রন্থ গ্রণয়ন কমিটির অন্যতম সম্পাদক। মাওলানা নুরুদ্দিন ফতেহ্পুরী গত শতকের আশির দশকে বিভিন্ন স্থানের অপ্রকাশিত শিলালিপির পাঠ উদ্ধার করতে আরম্ভ করেন। ২০১০ সাল থেকে তিনি ঢাকার স্থাপত্য বিষয়ক গ্রন্থ প্রণয়ন কমিটির শিলালিপি বিষয়ক প্রকাশিতব্য গ্রন্থের অন্যতম সম্পাদক হিসেবে যুক্ত হন।তিনি ১৯৪৮ সালে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার মুক্তারপুর ইউনিয়নের পোটন (ফতেহ্পুর) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকার বড় কাটরা মাদরাসা, করাচির জামেয়া ইসলামিয়া এবং  লাহোরের জামেয়া আশরাফিয়ায় উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন। কর্মজীবনে তিনি বড় কাটরা মাদরাসা ও খাজে দেওয়ান লেন মহিলা মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ঢাকার বড় ভাট মসজিদের খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মাওলানা ফতেহ্পুরী বিভিন্ন ভাষায় একাধিক গ্রন্থ রচনা করেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে ‘বিন্দুবিহীন বর্ণে মহানবী (সা.)’ ‘বিন্দুবিহীন বর্ণে বাংলাদেশ’, ‘কুন্তু লা আদরী’ (উর্দু ভাষায় লেখা গল্প গ্রন্থ), শেখ সাদির কাব্য ‘কারিমা’ (অনুবাদ), সুফী কবিতার সংকলন ‘জজবায়ে মারেফত’ (অনুবাদ) ইত্যাদি অন্যতম।


২৩ জানুয়ারি ২০২৩

কুমিল্লার দয়াপুর মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা সালেম

কুমিল্লার দয়াপুর মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা সালেম সোমবার ২৩ জানুয়ারি সকাল ৮ টা ২৫ মিনিটে ৮১ বছর বয়সে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। তিনি জামিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম মাওলানা বজলুর রহমান রহ. এর বড় ছেলে। হাদিস পড়িয়েছেন ফরিদাবাদ জামিয়ায়। একাধারে তিনি ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি, সমাজসেবক, মুহাদ্দিস ও সংগঠক। নিজ এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বহু মসজিদ, মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন। এছাড়া, তিনি বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন। এছাড়া তিনি নেভি হোসিয়ারি ও এমএস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা। নিটওয়্যার শিল্পের অন্যতম পথিকৃত মো. সালেম তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদস্য ছিলেন।


২৭ জানুয়ারি ২০২৩

সাবেক এমপি আল মারকাজুল ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুফতি শহিদুল ইসলাম

নড়াইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আল-মারকাজুল ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুফতি শহিদুল ইসলাম (৬৩) বৃহস্পতিবার ২৭ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১২টার দিকে মানিকগঞ্জে তার প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসা আবু হুরায়রায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ইন্তেকাল করেছেনআল মারকাজুল ইসলামীর (এএমআই) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, নড়াইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুফতি শহিদুল ইসলাম। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ডায়াবেটিস, প্রেসারসহ বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগেছেন। তার জানাজায় ইমামতি করেন ফিলিস্তিনের বায়তুল মুকাদ্দাসের ইমাম শায়খ আলী ওমর আল আব্বাসি। ১৫ মার্চ ১৯৬০ সালে ফরিদপুরের ঝিলটুলী এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পৈত্রিক নিবাস নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলায়। তার পিতা শামসুল হক সরদার। পাকিস্তানের করাচি নিউটাউন মাদ্রাসা থেকে ১৯৮৮ সালে দাওরায়ে হাদিস ডিগ্রি অর্জনের পর ইফতা কোর্স সম্পন্ন করেন। ১৯৮৮ সালে মুফতি শহীদসহ আরও কয়েকজন আলেমদের সমন্বয়ে গঠিত হয় আল মারকাজুল ইসলামী (এএমআই)। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সময় মৃতদের দাফন ও সৎকার কার্যক্রম নিয়ে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিল সংস্থাটি।


৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

বেফাকের সিনিয়র কর্মকর্তা মাওলানা আব্দুস সামাদ

বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের তালিম তরবিয়াত বিভাগের সহকারী পরিচালক মাওলানা আব্দুস সামাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন। বেফাক মহাপরিচালক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী জানান, সেদিন বেফাকের শূরা বৈঠক ছিল। সকাল থেকেই স্বাভাবিক ছিলেন মাওলানা আব্দুস সামাদ। বৈঠকের শেষ দিকে তিনি হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।


বেফাক মহাপরিচালক বলেন, মাওলানা আব্দুস সামাদ নিষ্ঠা ও আস্থার সঙ্গে বেফাকে দীর্ঘদিন কাজ করে গেছেন। তাকে হারিয়ে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসিব করুন। তার পরিবার-পরিজনকে সবরে জামিল দান করুন।


২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

মাধবপুর খরকি মাদরাসার মুহতামিম আল্লামা হারুনুর রশিদ

সিলেট হবিগঞ্জের মাধবপুর ইসলামিয়া কাসেমুল উলুম খরকি মাদরাসার মুহতামিম, প্রবীণ আলেমে দ্বীন আল্লামা হারুনুর রশিদ ইন্তেকাল করেন ২১ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার)। আল্লামা হারুনুর রশিদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাদিয়াতুল কোরআনের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল ওয়াহাব ভূইয়া রহ. এর বড় জামাতা এবং আল্লামা ইউসুফ বান্নুরি রহ. এর শাগরেদ। তিনি ইসলামিয়া কাসেমুল উলুম খরকি মাদরাসার প্রায় ৫ যুগের সফলতম মুহতামিম ছিলেন।


২৭ মার্চ ২০২৩

হাটহাজারী মাদরাসার প্রবীণ শিক্ষক মাওলানা মুমতাজুল করিম ‘বাবা হুজুর’

বিগত কয়েক বছরে হাটহাজারী মাদরাসার প্রবীণ শিক্ষক মাওলানা মুমতাজুল করিম ‘বাবা হুজুর’-এর ইন্তেকাল নিয়ে গুজব ছড়ালেও ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ (সোমবার) মহান রবের ডাকে সাড়া দেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি দীর্ঘ ৩৯ বছর (১৯৮৪-২০২৩) প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করেছেন। মাওলানা মুমতাজুল কারিম ১৯৪২ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ থানার ডুলিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি এলাকার বিখ্যাত বটগ্রাম হামিদিয়া মাদরাসায় শিক্ষাজীবন শুরু করেন। এরপর ফেনী শর্শদি মাদরাসায় কিছুদিন পড়াশোনা করে দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসায় ভর্তি হন। পরে জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া মাদরাসা থেকে সুনাম ও কৃতিত্বের সঙ্গে দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করেন। দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করে উচ্চ শিক্ষার জন্য ১৯৬৩ সালে পাকিস্তানে যান। পাকিস্তানের বিখ্যাত মাদরাসা জামিয়া আশরাফিয়া লাহোর থেকে তাফসির ও আদব (আরবি সাহিত্য) বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে ময়মনসিংহের কাতলাসেন কাদেরিয়া কামিল মাদরাসায় মুহাদ্দিস হিসেবে যোগ দেন।  ওই বছরই (১৯৬৫) বরিশালের ঐতিহ্যবাহী চরমোনাই মাদরাসায় মুহাদ্দিস হিসেবে যোগ দেন এবং মুসলিম শরিফের দরস দেওয়া শুরু করেন। পরবর্তীতে ঢাকা আশরাফুল উলুম বড়কাটারা মাদরাসায় সাত বছর মুহাদ্দিস হিসেবে খেদমত করে চট্টগ্রামের পটিয়া মাদরাসায় মুহাদ্দিস হিসেবে নিয়োগ পান। পটিয়া মাদরাসায় তিনি টানা সাত বছর সুনামের সঙ্গে হাদিসের দরস দেন। এ সময় পটিয়া থেকে প্রকাশিত ‘মাসিক আত তাওহীদ’ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত জামিয়া হোসাইনিয়ার প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। ১৯৮৪ সালে দেশের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারীতে নিয়োগ পান। হাটহাজারী মাদরাসায় অত্যন্ত সুনাম-সুখ্যাতির সঙ্গে হাদিসের দরস দেন। হাটহাজারী মাদরাসায় অধ্যাপনাকালে শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের মাঝে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন। শিক্ষার্থীদের প্রতি তার অপরিসীম দরদ ও ভালোবাসার কারণে ছাত্ররা তাকে ‘বাবা হুজুর’ বলে সম্বোধন করতেন।


২৯ মার্চ ২০২৩

বেফাকের প্রধান প্রশিক্ষক মাওলানা শিব্বির আহমদ

হাটহাজারী মাদরাসার প্রবীণ শিক্ষক মাওলানা মুমতাজুল করিম ‘বাবা হুজুর’-এর ইন্তেকালের দুই দিন পরে ২৯ মার্চ (বুধবার) ইন্তেকাল করেন কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের প্রধান প্রশিক্ষক ও নোয়াখালীর প্রবীণ আলেম মাওলানা শিব্বির আহমদ ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। তিন ছেলে ও এক মেয়ের জনক তিনি। আল্লামা শিব্বির আহমদ নোয়াখালীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দারুল উলুম চরমুটুয়া মাদ্রাসার সদরুল মুদাররিস ছিলেন। এদেশে শিক্ষক প্রশিক্ষণকে তরান্বিত করতে আল্লামা শিব্বির আহমদের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।


২৭ মার্চ ২০২৩

হাটহাজারী মাদারাসার প্রধান মুফতি নূর আহমদ

২০২৩ সালের ২৭ মার্চ উম্মুল মাদারিস খ্যাত হাটহাজারী মাদরাসার প্রবীণ শিক্ষক মাওলানা মুমতাজুল করিম ‘বাবা হুজুর’-এর ইন্তেকালের পর একইমাসে ইন্তেকাল করেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান মুফতি ও প্রবীণ মুহাদ্দিস আল্লামা নূর আহমদ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।মুফতি নূর আহমদ দীর্ঘকাল ধরে হাটহাজারী মাদরাসার আবাসন বিষয়ক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষাবিভাগীয় প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তিনি ছিলেন আল্লামা মুফতি ফয়জুল্লাহ (রহ.)-এর বিশেষ ছাত্র ও সর্বশেষ খলিফা। হাটহাজারী মাদরাসার সাবেক পরিচালক আল্লামা শাহ হামেদ (রহ.)-এর বড় জামাতা ছিলেন তিনি। মুফতি নূর আহমদ (রহ.) ১৯৩৮ সালে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬০ সালে হাটহাজারী মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন। এরপর প্রায় আড়াই বছর তৎকালীন মুফতিয়ে আজম মুফতি ফয়যুল্লাহ (রহ.)-এর সান্নিধ্যে ফিকাহ ও ফতোয়া বিষয়ে গভীর পাণ্ডিত্ব অর্জন করেন। মুফতি ফয়যুল্লাহ (রহ.) হাটহাজারী মাদরাসার তৎকালীন পরিচালক আল্লামা শাহ আবদুল ওয়াহ্হাব (রহ.)-এর কাছে একটি চিঠি লিখে পাঠালে মুফতি নূর আহমদকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে দুই বছর পর তিনি মাদরাসা থেকে অব্যাহতি নেন।


২৭ মার্চ ২০২৩

জিরি মাদরাসার প্রবীণ মুহাদ্দিস মাওলানা আহমদ উল্লাহ কাসেমী

উম্মুল মাদারিস খ্যাত হাটহাজারী মাদরাসার প্রধান মুফতি ও প্রবীণ মুহাদ্দিস আল্লামা নূর আহমদের ইন্তেকালের দিনই (২৭ মার্চ সোমবার) সকাল ১১ টায় চট্টগ্রাম আগ্রাবাদের একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। বিদায় নেন চট্টগ্রামের আরেক ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আলজামিয়াতুল ইসলামিয়া আরাবিয়া জিরির (জিরি মাদরাসা) প্রবীণ মুহাদ্দিস ও বহু শীর্ষ আলেমের শিক্ষক মাওলানা শাহ আহমদ উল্লাহ কাসেমী। মাওলানা আহমদ উল্লাহ কাসেমী একজন সুদক্ষ শিক্ষক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। দেশের শীর্ষ আলেম আল্লামা শাহ তৈয়ব রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, আল্লামা আবদুস সালাম চাটগামী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ও জামিয়া জিরির বর্তমান শাইখুল হাদিস মুসা সন্দীপী-সহ বহু আলেম তার ছাত্র। পটিয়া উপজেলার হরিণ খাইন গ্রামের এক ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি পরিবারে ১৯২৫ ঈসায়ী সনে জন্মগ্রহণ করেন মাওলানা আহমদ উল্লাহ কাসেমী।


৭ এপ্রিল ২০২৩

বেফাকের সাবেক মহাপরিচালক মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরী

২০২৩ সালের শুরুর দিকে বেফাকের দুই দায়িত্বশীলের ইন্তেকালের পর মহান রবের ডাকে সাড়া দেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক মহাপরিচালক মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরী। তার ইন্তেকাল হয় ৭ এপ্রিল ২০২৩ রমজান মাসে। নারায়ণগঞ্জে একটি ইফতার মাহফিলে। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। মৃত্যুর আগে তিনি খেলাফত মজলিসের আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন মাদ্রাসায় শায়খুল হাদিস ও মুহাদ্দিস পদে হাদিসের দরস দিতেন। এর পাশাপাশি মৌলভীবাজার সরকারি কলেজেও অধ্যাপনা করেন। মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরী ১৯৫০ সালে ১ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মাওলানা আবদুন নূর শায়খে ইন্ধেশ্বরী ছিলেন প্রখ্যাত আলেম। কর্মজীবনে তিনি বিভিন্ন মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেছেন।


২১ এপ্রিল ২০২৩

আল্লামা ফরিদপুরী রহ.-এর সর্বশেষ খলিফা মাওলানা আশরাফ আলী

ফরিদপুরের অন্যতম প্রবীণ আলেম ও আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী রহ.-এর সর্বশেষ খলিফা মাওলানা আশরাফ আলী ইন্তেকাল করেন ২১ এপ্রিল, ২৯ রমজান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল অন্তত ১১০ বছর। মাওলানা আশরাফ আলী এলাকায় ‘বড় হুজুর’ নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া ইসলামিয়া আজিজিয়া বাহিরদিয়ার (বাহিরদিয়া মাদরাসা) সাবেক মুহতামিম এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জামিয়া ইসলামিয়া আসলিয়া বাহিরদিয়ার (ছোট বাহিরদিয়া মাদরাসা) প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। মাওলানা আশরাফ আলী রহ. ঊনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে ফরিদপুর জেলার বর্তমান সালথা উপজেলার অন্তর্গত ছোট বাহিরদিয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা খন্দকার আব্দুল মালেক। পারিবারিকভাবে ধর্মীয় আধ্যাত্মিকতায় তাদের বেশ সুনাম ছিল এলাকাজুড়ে। সে হিসেবে শৈশবেই পরিবার থেকে নৈতিক শিক্ষা লাভ করেন এবং প্রাথমিক পড়ালেখার হাতেখড়িও হয় পরিবার থেকে। শৈশবেই কৈজুড়ি ইউনিয়নের অন্তর্গত বিল নালিয়া জুনিয়ার হাই মাদরাসায় ভর্তি হন। এরপর ভর্তি হন ফরিদপুরের ঐতিহাসিক ময়েজউদ্দিন জুনিয়র হাই মাদরাসায় (ময়েজউদ্দিন হলেন সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ এর পিতামহ)।  ১৯৪৩/৪৪ ঈসাব্দে উচ্চ শিক্ষার জন্য দেওবন্দ যান। দেওবন্দে পড়ার আগ্রহ থাকলেও এখানে ভর্তি না হয়ে ভর্তি হন জামিয়া মাজাহিরুল উলুম সাহারানপুরে। সাহরানপুরে আশরাফ আলী থানভী রহ.-এর বিশিষ্ট খলিফা হজরত মাওলানা আসাদুল্লাহ রহ. বাংলাদেশের ছাত্র আশরাফ আলীকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন। সাহারানপুরে পড়ার সুবাদে তৎকালীন শীর্ষ আলেমদের সংস্পর্শ পান তিনি। তাদের অন্যতম শাইখুল হাদীস হজরত যাকারিয়া রহ.।


১৯৫৩ সালে জামিয়া মাজাহিরুল উলুম থেকে কৃতিত্বের সাথে দাওরায়ে হাদিস পাশ করেন। সাহরানপুরে পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরে চাচার প্রতিষ্ঠিত ফরিদপুরের ঐতিবাহী জামিয়া ইসলামিয়া আজিজিয়া মাদরাসায় নায়েবে মুহতামিম হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৮৭/৮৮ সালে বাহিরদিয়া মাদরাসা থেকে তিনি চলে আসেন।  এরপর ২০০০ সালে নিজ গ্রাম ছোট বাহিরদিয়ায় ‘জামিয়া ইসলামিয়া আসলিয়া বাহিরদিয়া’ নামে নতুন আরেকটি মাদরাসার গোড়াপত্তন করেন। এটিও এখন এলাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। পাকিস্তান আমলে ১৯৬৯ ঈসাব্দে এলাকাবাসীর জোরাজুরিতে নেজামে ইসলাম পার্টির মনোনয়ন নিয়ে জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেন তিনি। দ্বিতীয়বার ১৯৮১ ঈসাব্দে হজরত হাফেজ্বী হুযুর রহ.-এর খেলাফত আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন এবং ফরিদপুর জেলার খেলাফত আন্দোলনের আমিরের দায়িত্ব পালন করেন।


১০ মে ২০২৩

ফরিদপুরের নিজামুল উলুম মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা জহুরুল হক

ফরিদপুরের অন্যতম প্রবীণ আলেম ও আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী রহ.-এর সর্বশেষ খলিফা মাওলানা আশরাফ আলীর ইন্তেকালের পরেই মাসেই ১০ মে (বুধবার) ইন্তেকাল করেন জেলাটি আরেক প্রসিদ্ধ আলেম মুফাসসিরে কোরআন আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া নিজামুল উলুম পুরুরা মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা জহুরুল হক।


তিনি দীর্ঘদিন ধরে আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া নিজামুল উলুম পুরুরা মাদরাসার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। মৃত্যুর সময় তার আনুমানিক বয়স ৯৫।


১৭ মে ২০২৩

হাইয়াতুল উলয়ার সদস্য ও সিলেটের প্রবীণ আলেম মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী

১৭ মে (বৃহস্পতিবার) ইন্তেকাল করেন সিলেটের প্রবীণ আলেম, জামেয়া কাসিমুল উলুম দরগাহ মাদরাসার মুহতামিম, শায়খুল হাদিস ও প্রধান মুফতি মাওলানা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী। দেশের অন্যতম প্রবীণ এই আলেম সম্মিলিত কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড আল হাইয়াতুল উলয়ার সদস্য ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটির সদস্য, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিলেট জেলার সভাপতি, সিলেটের প্রাচীন শিক্ষাবোর্ড আযাদ দ্বীনী এদারার সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, খাদিমুল কুরআন পরিষদের সভাপতি, সিলেট জেলা উলামা কমিটির চেয়ারম্যান, সিলেট জেলা ফতোয়া বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মাওলানা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী ১৯৬৯ সালে সুনামগঞ্জ দরগাহপুর মাদরাসায় শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবনের সূচনা করেন। এরপর ১৯৭৩ সালে জামেয়া কাসিমুল উলুম দরগার শিক্ষক হিসেবে মনোনীত হন। তখন থেকে প্রায় ৫১ বছর ধরে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন।মাওলানা মুহিব্বুল হক ১৯৪৫ সালের ৬ ডিসেম্বর সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ঝিঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের ফখরোচটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ইসহাক রহ.-ও একজন বরেণ্য আলেম ছিলেন। তিনি ১৯৬৯ সালে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসা থেকে বার্ষিক পরীক্ষায় সম্মিলিত মেধাতালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করে দাওরায়ে হাদিস পাস করেন।


২৭ মে ২০২৩

উস্তাদুল হুফফাজ হাফেজ নুরুজ্জামান

উস্তাদুল হুফফাজ খ্যাত হাফেজ নুরুজ্জামান ইন্তিকাল করেন ২৭ মে (শনিবার)। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ জেলার ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হবিগঞ্জের মাধবপুরের জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম ইসলামিয়া হরষপুর মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের প্রধান ছিলেন। জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম ইসলামিয়া হরষপুর মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের প্রধান হিসেবে দীর্ঘ ৫০ বছরের অধিককাল যাবত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ এলাকায় হরষপুরের হাফেজ সাহেব হুজুর নামে তিনি পরিচিত। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুফতি আজম আল্লামা মুফতি নুরুল্লাহ, হবিগঞ্জের আল্লামা তাফাজ্জল হক হবিগঞ্জীসহ অনেক বিখ্যাত আলেমের সন্তান তার কাছে হিফজ সম্পন্ন করেছেন। তার হাজার হাজার ছাত্র দেশে-বিদেশে দ্বীনের খেদমতে নিয়োজিত আছেন। তার দুই ছেলে মুফতি হাসান জুনায়েদ ও সাংবাদিক সালমান তারেক শাকিল। তার মেয়ের জামাতা আজিমপুর ফয়জুল উলুম মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মুফতি লুৎফুর রহমান ও মাওলানা রুহুল আমিন সাদী (সায়মুন সাদী)।


২ জুন ২০২৩

হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা ইয়াহইয়া

বছরের শুরুর দিকে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদরাসার প্রবীণ দুই শিক্ষকের ইন্তেকালের পর মাঝামাঝি সময়ে ২ জুন (শুক্রবার) ইন্তেকাল করেন প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা শাহ মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া।


আল্লামা ইয়াহইয়া হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক হিসেবে ২০২১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে দীর্ঘদিন হেফাজতের কেন্দ্রীয় আমির শাহ আহমদ শফী হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক ছিলেন।


২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আহমদ শফীর মৃত্যু হলে মাদরাসার প্রধান মুফতি আবদুস সালামকে প্রধান করে একটি পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ২০২১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর মুফতি আবদুস সালামকে মহাপরিচালক ও আল্লামা ইয়াহইয়াকে সহকারী পরিচালক ঘোষণার পরেই ‍মুফতি আবদুস সালাম অসুস্থ হয়ে পড়েন বৈঠকে। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মুফতি আবদুস সালামের জানাজার পরপরই আল্লামা ইয়াহইয়াকে মহাপরিচালক ঘোষণা করা হয়।


২৫ জুন ২০২৩

শেখ জনূরুদ্দীন  রহ. মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা রেদওয়ান আল হাবিব

রাজধানীর চৌধুরীপাড়ার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শেখ জনূরুদ্দীন  রহ. দারুল কুরআন মাদরাসার সাবেক মুহাদ্দিস, চৌধুরীপাড়া মসজিদ-ই-নূরের সাবেক ইমাম, ফেনীর মুন্সিরহাট দারুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা রেদওয়ান আল হাবিব ইন্তেকাল করেন ২৫ জুন।


১৪ আগস্ট ২০২৩

মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ইন্তেকাল করেন ১৪ আগস্ট (সোমবার)। শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়। কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর তাকে এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।২০১০ সালের ২৯ জুন রাজধানীর শাহীনবাগের বাসা থেকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় মাওলানা সাঈদীকে। পরে ওই বছরের ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের আটটি অভিযোগের মধ্যে দুটি অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। পরে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেন। দীর্ঘ ১৩ বছর কারাবন্দী ছিলেন তিনি। পিরোজপুরের জিয়ানগরের সাঈদখালিতে ১৯৪০ সালে জন্ম নেন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। বাংলাদেশের মানুষের কাছে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পরিচিতি পান মূলত আশির দশকের শুরু থেকে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় তখন তিনি ওয়াজ মাহফিলে বয়ান করতেন।


১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ময়মনসিংহের প্রবীণ আলেম মুফতি ফজলুল হক


ময়মনসিংহের সর্বজনমান্য প্রবীণ আলেম মুফতি ফজলুল হক ইন্তেকাল করেন ১৬ সেপ্টেম্বর (শনিবার)। মুফতি ফজলুল হক ছিলেন যুগশ্রেষ্ঠ মনীষীদের সান্নিধ্যপ্রাপ্ত ও স্নেহধন্য শাগরেদ। তিনি নিজেও অত্যন্ত উঁচুমাপের প্রবাদতুল্য আলেম ছিলেন।


দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম ও খতিব, ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহীর ফতোয়া বোর্ডের সভাপতি, জামিয়া ইসলামিয়া সেহড়া-মোমেনশাহীর শায়খুল হাদিস ও মুক্তাগাছা আব্বাছিয়া কামিল মাদ্রাসায় হেড মুহাদ্দিস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি আলিয়া মাদ্রাসায় কামিল পাস করে লালবাগ মাদ্রাসায় পড়াশোনা শেষে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দে পড়ালেখা করেছেন৷ শায়খ জাকারিয়া (রহ.)-এর এই শাগরেদ শিক্ষাজীবন শেষ করে মুক্তাগাছা আব্বাসিয়া আলিয়া মাদ্রাসায় কর্মজীবন শুরু করেন। ওই সময় জামিয়া আশরাফিয়া খাগডহরেও হাদিসের দরস দিয়েছেন। মুফতি ফজলুল হক সহজ-সরল জীবনযাপনে অভ্যস্থ ছিলেন। তথ্য ও যুক্তিভিত্তিক মাসয়ালা ও ফতোয়া উপস্থাপনে তার পারঙ্গমতা ছিলো প্রবাদতুল্য। মুফতি ফজলুল হককে বলা হয়- কিতাবপত্রের মানুষ। এককভাবে মুফতি সাহেবের বাসার কিতাব সংগ্রহ ঈর্ষণীয়৷ মুফতি ফজলুল হক তিন ছেলে ও দুই মেয়ের জনক ছিলেন। করোনাকালে তার এক ছেলে ইন্তেকাল করে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৮ বছর।


২ নভেম্বর ২০২৩

প্রফেসর হজরত মুহাম্মাদ হামীদুর রহমান

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক সহকারী অধ্যাপক প্রফেসর মুহাম্মাদ হামীদুর রহমান ইন্তেকাল করেন ২ নভেম্বর ২০২৩ (বৃহস্পতিবার)। সর্বমহলে তিনি ‘প্রফেসর হজরত’ হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন। প্রফেসর মুহাম্মাদ হামীদুর রহমান ৯ জানুয়ারি ১৯৩৮ সালে মুন্সীগঞ্জের নয়াগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ইসলামিয়া হাইস্কুল থেকে ১৯৫৫ সালে ম্যাট্রিক পাস করে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। পরে ১৯৫৭ সালে কলেজ পাস করে ভর্তি হন আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (বর্তমানে বুয়েট)। ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে কর্মজীবন শুরু করেন সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনে। পরে যোগ দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট)। তিনি ৫ ছেলে ও ২ মেয়ের জনক। ছেলেরা সবাই হাফেজ ও আলেম। প্রফেসর হজরত হাফেজ্জী হুজুর (রহ.)-এর কাছে বায়াত হন ১৯৭৪ সালে। এর পাঁচ বছর পর তিনি হাফেজ্জী হুজুর (রহ.)-এর খেলাফত লাভ করেন। প্রফেসর হজরত প্রফেশনালি ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছেন। সরকারি পর্যায়ে গঠিত বিভিন্ন কমিটিতে বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন। তবে বৈষয়িকভাবে আর ব্যস্ত হতে চাননি। তিনি দুনিয়ার যশ-খ্যাতির তুলনায় আখিরাতকে প্রাধান্য দিয়েছেন, তিনি সফলও হয়েছেন। হাফেজ্জী হুজুর (রহ.)-এর ইন্তেকালের পর তিনি হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভি (রহ.)-এর সর্বশেষ খলিফা মুহিউস সুন্নাহ মাওলানা আবরারুল হক (রহ.)-এর কাছে বায়াত হন এবং খেলাফত লাভ করেন।


২৯ নভেম্বর ২০২৩

ফরিদাবাদ মাদরাসার প্রবীণ মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল গণী

রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস (শায়খে সানী) মাওলানা আবদুল গণী ইন্তেকাল করেন ২৯ নভেম্বর। ৭০ বছর বয়সী প্রবীণ এ আলেমের ২০১৬ সালে পাকস্থালিতে ক্যান্সার ধরা পড়ে। দেশে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার উদ্দেশ্য  ২০১৭ সালে তাকে ভারতে নেওয়া হয়। ভারতের কলকাতা সরোজ গুপ্ত ক্যান্সার সেন্টার অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধীনে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। তবে গত কয়েক মাস আগে তিনি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে আবারো তার অবস্থার অবনতি ঘটে।


৭ ডিসেম্বর ২০২৩

গওহরডাঙ্গা মাদরাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা আবদুর রউফ

সদর সাহেব খ্যাত আলেম মোজাহেদে আজম আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. প্রতিষ্ঠিত জামিআ ইসলামিয়া দারুল উলূম খাদেমুল ইসলাম (গওহরডাঙ্গা মাদরাসা) এর নায়েবে মুহতামিম ও শায়খুল হাদিস মাওলানা আবদুর রউফ (ঢাকার হুজুর) ৭ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) ইন্তেকাল করেন। তিনি শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. শিষ্য ও করাচির হজরত আল্লামা হাকিম আখতার রহ. এর খলিফা ছিলেন এবং গওহরডাঙ্গা সহ দেশের বিভিন্ন মাদরাসায় বুখারী শরীফের দরস প্রদান করতেন।


৩০ ডিসেম্বর ২০২৩

চাঁদপুর এমদাদিয়া মাদরাসার সাবেক মুহতামিম মাওলানা আব্দুর রশীদ

২০২৩ সালের শেষ প্রান্তে এসে চলে গেলেন চাঁদপুর এমদাদিয়া মাদরাসার সাবেক মুহতামিম কচুয়ার বিশিষ্ট আলেম শায়খুল হাদিস মাওলানা আব্দুর রশীদ (৮১)। চাঁদপুরের কচুয়ার ঘাঘড়া গ্রামে বাবা মুহাম্মদ আমজাদ আলীর ঔরসে জন্ম নেওয়া এই আলেম ৩০ ডিসেম্বর শনিবার বিকাল ৪টা ত্রিশ মিনিটে অসুস্থতাবস্থায় থেকে নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন। কচুয়ার অন্যতম শীর্ষ মাদরাসা জামিয়া ইসলামিয়া আহমদিয়া মাদরাসা মাঠে তাঁর জানাযা পর দিন রোববার ৩১ ডিসেম্বর সকাল ১০ ঘটিকায় অনুষ্ঠিত হয়।


উজানী পীর মাওলানা আশেকে এলাহী-এর ইমামতিতে জানাযায় উপস্থিত ছিলেন মাওলানা ফজলে এলাহী, উজানী মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মাহবুবে এলাহী, কচুয়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আবু হানিফা, নায়েবে মুহতামিম ও কচুয়া বড় মসজিদের ইমাম মুফতী মাহবুবুর রহমান, নিশ্চিন্তপুর কামিল মাদরাসার হেড মুহাদ্দিস মাওলানা নুরুজ্জামান, হাজীগঞ্জ বড় মসজিদে খতীব শায়খুল হাদীস আব্দুর রব,


হাজীগঞ্জ আলিয়ার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা কাজী আবু তাহের, চাঁদপুর জাফরাবাদ মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা ইলিয়াস ফরিদী, ফতেহবাপুর মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা দেলোয়ার হুসাইনসহ কচুয়া ও চাঁদপুরের গণমান্য ব্যক্তিবর্গ ও আলেম-ওলামা।


মরহুম মাওলানা আব্দুর রশীদ ছিলেন প্রখ্যাত আলেম মনীষী হাফেজ্জী হুজুর ও মুহাদ্দিস সাব নামে প্রসিদ্ধ হেদায়েত উল্লাহ সাহেবের খাস ছাত্র। প্রখ্যাত মুফাস্সির মাওলানা জামাল উদ্দিন সাহেবের পর তিনি কচুয়া অঞ্চলে  চমৎকারভাবে তাফসির মাহফিলগুলো জামাল সাহেবের তর্জে চালিয়ে গেছেন। শিক্ষা সমাপনীর পর প্রথম দিকে তিনি কচুয়া জামিয়া ইসলামিয়া আহমাদিয়া মাদরাসায় সিনিয়র মুহাদ্দিস হিসেবে ছিলেন। পরবর্তীতে চাঁদপুর এমদাদিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম হলেন। এরপর লম্বা সময় অসুস্থতা নিয়ে বাড়িতে কাটিয়েছেন কচুয়ার গর্ব এই আলেম।

মৃত্যুকালে তিনি এক স্ত্রী, ৪ ছেলে ও ৪ মেয়েসহ অসংখ্য ছাত্র, গুণগ্রাহী ও মুহিব্বীন রেখে যান।

********

Thursday, December 21, 2023

  রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে ১০ ব্যক্তিকে সর্বোত্তম বলেছেন...

 

ব্যক্তিত্ব গঠনে ভালো কাজ করার গুরুত্ব অপরিসীম। আর যদি তা হয় রাসুলুল্লাহ -সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহ-আদর্শ তথা হাদিস থেকে, তাহলে তো কথাই নেই। এখানে আমরা জানব হাদিসের বর্ণনায় সেরা ১০ জন মানুষ বা উত্তম ১০ আমল।


১. ফজরের দুই রাকাত সুন্নত : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত) দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু আছে তার থেকে উত্তম।

(মুসলিম, হাদিস : ৭২৫)


২. প্রথম কাতারে নামাজ : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, পুরুষের কাতারের মধ্যে উত্তম হলো প্রথম কাতার এবং নিকৃষ্ট হলো শেষ কাতার। (মুসলিম, হাদিস : ৪৪০)


উল্লিখিত শেষ কাতারকে নিকৃষ্ট বলা হয়েছে মূলত ফজিলত বোঝানোর জন্য। প্রকৃতপক্ষে নিকৃষ্ট নয়, সব কাতারই গুরুত্বপূর্ণ। তবে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে সামনের কাতারকে।


অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই প্রথম কাতারে আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন এবং তাদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৬৬৪)


৩. নামাজে বিনয়ী হওয়া : বিনয়ী শব্দের বিপরীত হলো অহংকার। অহংকার থেকে মুক্ত ইবাদত আল্লাহ কবুল করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ওই ব্যক্তি, যে নামাজের মধ্যে নিজের কাঁধ নরম করে রাখে।

অর্থাৎ অহংকার মুক্ত থাকে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৬৭২)


৪. নামাজের শেষে তাসবিহ পাঠ : প্রত্যেক নামাজের পর তিন তাসবিহ পাঠের বিশেষ গুরুত্ব আছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন কিছু নেক কাজের আদেশ দেব? যারা নেক কাজে তোমাদের চেয়ে অগ্রগামী, তাদের পর্যায়ে পৌঁছতে সহায়ক হবে। তা হলো তোমরা প্রত্যেক নামাজের পর ৩৩ বার করে তাসবিহ (সুবহানাল্লাহ), তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ) এবং তাকবির (আল্লাহু আকবার) পাঠ করবে। (বুখারি, হাদিস : ৮৪৩)


৫. কোরআন পাঠ ও পাঠদান : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ওই ব্যক্তি যে নিজে কোরআন শিক্ষা করে এবং অন্যকে শিক্ষা দেয়।

(বুখারি, হাদিস : ৫০২৭)


৬. অসহায় লোকদের সাহায্য করা : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, নিচের হাত থেকে ওপরের হাত উত্তম। কেননা, ওপরের হাত হলো দানকারীর হাত, নিচের হাত হলো গ্রহণকারীর হাত। (বুখারি, হাদিস : ১৪২৯)


৭. মানুষকে খাদ্য খাওয়ানো ও সালাম দেওয়া : এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করলেন, ইসলামের কোন আমলটি উত্তম? তিনি বলেন,মানুষকে খানা খাওয়ানো এবং পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম প্রদান করা। (বুখারি, হাদিস : ২৮)


৮. সুন্দর চরিত্র : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি সে, যার চরিত্র সবচেয়ে সুন্দর। (বুখারি, হাদিস : ৩৫৫৯)


৯. বিরোধ মীমাংসার উদ্যোগ : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোনো মুসলিমের পক্ষে বৈধ নয় তার কোনো ভাইয়ের সঙ্গে তিন দিনের বেশি সম্পর্কচ্ছেদ রাখা। যে তাদের দুজনের দেখা-সাক্ষাৎ হলে একজন একদিকে আরেকজন অন্যদিকে চেহারা ঘুরিয়ে নেয়, তাদের মধ্যে উত্তম ওই ব্যক্তি, যে প্রথম সালাম প্রদান করবে। (বুখারি, হাদিস : ৬২৩৭)


১০. পরিবারের সঙ্গে উত্তম আচরণ : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তি সে যে তার পরিবারের কাছে উত্তম। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৮৯৫)

Wednesday, November 24, 2021

                           The Most In-Demand Skills in Digital Leadership(Cont...) 



4. Strategy

Digital leaders must be able to unite the organization if they are going to undergo a successful transformation. They must nurture a digital culture that embraces the change. For that to happen, a clear, coherent strategy outlining their digital agenda is essential.

When digital transformation begins to effect change in an organization, disrupting the business model, processes and practices, the business is recognized as having ‘digital maturity’.

The most successfully digital leaders will not only have a clear vision for the future of the company but also be willing to commit the resources and implement the changes needed to make that vision happen. They will need to be progressively forward-thinking, with their views on digital strategy having a much longer scope than leaders and companies who aren’t as digitally mature.

Wednesday, November 17, 2021

                   The Most In-Demand Skills in Digital Leadership(Cont...) 

3. Digital Literacy

Research from Harvard Business Review and MIT found that in a study with 1,000 CEOs, 90% believe their businesses are being disrupted or reinvented by digital business models. When asked about their capabilities, 70% believe they do not possess the right skills, leader, or operating structure to adapt.

The problem many face is that they are from an older generation and are having to learn basic technology and digital marketing methods later in life, which is always trickier than growing up immersed in it. These so-called digital immigrants can quickly fall behind their younger peers if they do not make proactive strides to getting up-to-speed.

As more people get to grips with technology and the tools of the internet, the best and brightest digital leaders will rise up upon the knowledge they acquire. Along the way, they will develop advanced cognitive, creative and social skills. But even when they become an expert, there will always be more to learn cementing the need for continuous professional development at all levels of a workforce.