রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে ১০ ব্যক্তিকে সর্বোত্তম বলেছেন...
ব্যক্তিত্ব গঠনে ভালো কাজ করার গুরুত্ব অপরিসীম। আর যদি তা হয় রাসুলুল্লাহ -সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহ-আদর্শ তথা হাদিস থেকে, তাহলে তো কথাই নেই। এখানে আমরা জানব হাদিসের বর্ণনায় সেরা ১০ জন মানুষ বা উত্তম ১০ আমল।
১. ফজরের দুই রাকাত সুন্নত : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত) দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু আছে তার থেকে উত্তম।
(মুসলিম, হাদিস : ৭২৫)
২. প্রথম কাতারে নামাজ : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, পুরুষের কাতারের মধ্যে উত্তম হলো প্রথম কাতার এবং নিকৃষ্ট হলো শেষ কাতার। (মুসলিম, হাদিস : ৪৪০)
উল্লিখিত শেষ কাতারকে নিকৃষ্ট বলা হয়েছে মূলত ফজিলত বোঝানোর জন্য। প্রকৃতপক্ষে নিকৃষ্ট নয়, সব কাতারই গুরুত্বপূর্ণ। তবে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে সামনের কাতারকে।
অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই প্রথম কাতারে আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন এবং তাদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৬৬৪)
৩. নামাজে বিনয়ী হওয়া : বিনয়ী শব্দের বিপরীত হলো অহংকার। অহংকার থেকে মুক্ত ইবাদত আল্লাহ কবুল করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ওই ব্যক্তি, যে নামাজের মধ্যে নিজের কাঁধ নরম করে রাখে।
অর্থাৎ অহংকার মুক্ত থাকে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৬৭২)
৪. নামাজের শেষে তাসবিহ পাঠ : প্রত্যেক নামাজের পর তিন তাসবিহ পাঠের বিশেষ গুরুত্ব আছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন কিছু নেক কাজের আদেশ দেব? যারা নেক কাজে তোমাদের চেয়ে অগ্রগামী, তাদের পর্যায়ে পৌঁছতে সহায়ক হবে। তা হলো তোমরা প্রত্যেক নামাজের পর ৩৩ বার করে তাসবিহ (সুবহানাল্লাহ), তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ) এবং তাকবির (আল্লাহু আকবার) পাঠ করবে। (বুখারি, হাদিস : ৮৪৩)
৫. কোরআন পাঠ ও পাঠদান : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ওই ব্যক্তি যে নিজে কোরআন শিক্ষা করে এবং অন্যকে শিক্ষা দেয়।
(বুখারি, হাদিস : ৫০২৭)
৬. অসহায় লোকদের সাহায্য করা : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, নিচের হাত থেকে ওপরের হাত উত্তম। কেননা, ওপরের হাত হলো দানকারীর হাত, নিচের হাত হলো গ্রহণকারীর হাত। (বুখারি, হাদিস : ১৪২৯)
৭. মানুষকে খাদ্য খাওয়ানো ও সালাম দেওয়া : এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করলেন, ইসলামের কোন আমলটি উত্তম? তিনি বলেন,মানুষকে খানা খাওয়ানো এবং পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম প্রদান করা। (বুখারি, হাদিস : ২৮)
৮. সুন্দর চরিত্র : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি সে, যার চরিত্র সবচেয়ে সুন্দর। (বুখারি, হাদিস : ৩৫৫৯)
৯. বিরোধ মীমাংসার উদ্যোগ : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোনো মুসলিমের পক্ষে বৈধ নয় তার কোনো ভাইয়ের সঙ্গে তিন দিনের বেশি সম্পর্কচ্ছেদ রাখা। যে তাদের দুজনের দেখা-সাক্ষাৎ হলে একজন একদিকে আরেকজন অন্যদিকে চেহারা ঘুরিয়ে নেয়, তাদের মধ্যে উত্তম ওই ব্যক্তি, যে প্রথম সালাম প্রদান করবে। (বুখারি, হাদিস : ৬২৩৭)
১০. পরিবারের সঙ্গে উত্তম আচরণ : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তি সে যে তার পরিবারের কাছে উত্তম। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৮৯৫)
No comments:
Post a Comment